যুব দিবসে ৪৭ কোটি টাকার ঋণ ও ২০ তরুণকে জাতীয় পুরস্কার
১২ আগস্ট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ৪,৯৮৫ জন তরুণের হাতে ৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকার যুব ঋণ তুলে দেবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। একই মঞ্চে আত্মকর্মসংস্থান ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ২০ তরুণ ‘জাতীয় যুব পুরস্কার’ পাবেন। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রযুক্তিনির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বে অগ্রগতি’। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সচিব মহাবুব-উল-আলম ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী সাইফুজ্জামান। সকালে জাতীয় জাদুঘর থেকে র্যালি বেরিয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টালে গিয়ে শেষ হবে।
মূল তথ্য
ঋণপ্রাপ্ত ৪,৯৮৫ জনের মধ্যে ২,৫৩৪ জন পুরুষ এবং ২,৪৫১ জন নারী। প্রত্যেকে ব্যবসা প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুদসুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ পাবেন, যেটি চার বছর গ্রেস-পিরিয়ডসহ আট বছরে ফেরত দেওয়া যাবে। জাতীয় পুরস্কারের ১৪টি পদক সফল আত্মকর্মী ও ৬টি পদক যুব সংগঠকদের জন্য; এর মধ্যে ট্রান্সজেন্ডার, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণদের জন্য আলাদা তিনটি কোটা রাখা হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা
• ৪,৯৮৫ জন ঋণপ্রার্থী
• মোট ঋণ ৪৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা
• পুরস্কারপ্রাপ্ত ২০ জন
• গত এক বছরে ২,৭১,৭১৯ যুবকের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
• বেকার ৯ লাখ তরুণের কর্মসংস্থানে প্রকল্প চলমান
• ৬৪ জেলায় ফ্রিল্যান্সিংসহ ৩০টি ট্রেডে কোর্স
প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে ১৮–৩৫ বছর বয়সী জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন কোটি। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২৪ সালে বেকার যুবকের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ। ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণ, মাইক্রো ক্রেডিট ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি চালালেও করোনার পর নতুন করে তহবিল সংকটে পড়ে। গত দুই বছর আইএলও ও বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ‘ইয়ুথ এমপাওয়ারমেন্ট স্কিম’ পুনরায় গতি পেয়েছে।
প্রতিক্রিয়া
সচিব মহাবুব-উল-আলম রাইজিংবিডিকে বলেন, “ঋণ পেতে আগ্রহীদের ৩০ শতাংশই প্রযুক্তি খাতে কাজ করতে চান, যা ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য ভালো ইঙ্গিত।” জাতীয় পুরস্কার তালিকায় থাকা খুলনার ট্রান্সজেন্ডার উদ্যোক্তা স্নিগ্ধা বলেন, “সরকারি স্বীকৃতি পেলে মূলধারায় আসতে আরও সাহস পাবো।” পরিকল্পনাবিদ আনিসুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, “ঋণ বিতরণের পাশাপাশি অনুসরণ-পর্যবেক্ষণ জোরদার না করলে খেলাপি বাড়বে, অতীতে সে রকম উদাহরণ রয়েছে।”
এরপর কী
দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত ‘বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২৫’ অনুযায়ী আগামী দুই বছরে ১,০০০ কোটি টাকার নতুন যুব তহবিল তৈরির প্রস্তাব আছে, যার ৩০ শতাংশ বরাদ্দ যাবে স্টার্ট-আপ ও ই-কমার্সে। চলতি অর্থবছরেই ৬৪ জেলায় মিনি-ইনকিউবেটর স্থাপন, ১০ হাজার বাইওগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণ এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষিত এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে।

