জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষা ২১ জুলাই স্থগিত
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (এনইউ) আগামী ২১ জুলাই হওয়ার কথা থাকা ২০২৩ সালের ডিগ্রি (পাস) ও সার্টিফিকেট কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে। বুধবার ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়। স্থগিত হওয়া পরীক্ষার নতুন সময়সূচি পরে জানানো হবে। তবে একই সেশনের অন্য সব পরীক্ষা পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী হবে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘোষণাটি ২১০০-এর বেশি কলেজের লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর পরীক্ষাক্রমে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। পরীক্ষার স্থগিতের কারণ জানায়নি এনইউ, কিন্তু প্রশাসনিক ও পরীক্ষা কেন্দ্র–সংক্রান্ত কিছু জটিলতা সমাধানে সময় প্রয়োজন বলে কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন।
পটভূমি
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সারা দেশে প্রায় ২,১১০টি কলেজে ডিগ্রি (পাস) ও সার্টিফিকেট কোর্স পরিচালিত হয়। এ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়েছে ১৫ জুলাই থেকে এবং চলার কথা ২৮ আগস্ট পর্যন্ত। পদার্থবিজ্ঞান (বিষয় কোড–২০১৭) ছিল ২১ জুলাই সকালে। পরীক্ষাটি প্রধানত বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য, যারা পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণ হতে এই কাগজটিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়।
প্রতিক্রিয়া
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী হতাশা ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন। ঢাকা কলেজের বিএসসি পাস কোর্সের শিক্ষার্থী শারমিন সুলতানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, "দুই মাস ধরে শুধু এই সাবজেক্ট নিয়ে পড়ছিলাম। হঠাৎ স্থগিত হওয়ায় মানসিক চাপ বেড়ে গেল।" অন্যদিকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম মন্তব্য করেন, "সংগঠিত পরীক্ষাব্যবস্থায় অনিবার্য কারণেই কখনো কখনো তারিখ বদলাতে হয়। তবে আগেভাগে কারণ পরিষ্কার করলে শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ কমত।"
পরবর্তী পদক্ষেপ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, নতুন তারিখ নির্ধারণে পরীক্ষাকেন্দ্র, হল তালিকা ও প্রশ্নপত্র বিতরণ–সংক্রান্ত সমন্বয় সম্পন্ন হলে নোটিশ দেবে। শিক্ষার্থীদের নিজ কলেজের নোটিশ বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (www.nu.ac.bd) এবং অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ নজরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্য কোনো বিষয়ে পরীক্ষার সময়সূচি, কেন্দ্র তালিকা বা প্রবেশপত্র পরিবর্তন হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, পরীক্ষার কমিটি দ্রুত বসবে এবং ৭ কর্মদিবসের মধ্যে নতুন সময়সূচি ঘোষণার চেষ্টা করবে।
এর গুরুত্ব কী
একটি মাত্র বিষয় স্থগিত হলেও পুরো ডিগ্রি কোর্সের ফল প্রকাশ পিছিয়ে যেতে পারে, কারণ সব বিষয়ে পরীক্ষা শেষ না হলে স্ক্রুটিনি ও ট্যাবুলেশন বন্ধ থাকে। ফলে স্নাতকোত্তর ভর্তি, সরকারি চাকরির আবেদনের সময়সীমা ও বিদেশে উচ্চশিক্ষার আবেদন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়তে পারেন। শিক্ষা বিশ্লেষক ড. সানাউল হক মনে করেন, "জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মূলত মধ্যবিত্ত ও কর্মজীবী; সময়মতো সনদ না পেলে তাদের পেশাগত অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়।"
গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা
• সংশ্লিষ্ট কলেজ: ≈ ২,১১০
• শিক্ষার্থী (পদার্থবিজ্ঞান পেপার): ≈ ১.৪ লাখ
• কেন্দ্র সংখ্যা: ৮৫০+
• সাজেশন/গাইড বই বিক্রি: অনুমান ১২–১৫ কোটি টাকার বাজার
• সর্বশেষ এমন স্থগিতাদেশ: জুন ২০২২ (ঘূর্ণিঝড়ের কারণে)
• লক্ষ্যমাত্রা: ২০২৫ সালের মধ্যে সব পরীক্ষার ফল ৯০ দিনে প্রকাশ