যুক্তরাষ্ট্র-ইন্দোনেশিয়া বাণিজ্য চুক্তি: ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে শুল্ক কমে ১৯ শতাংশ

যুক্তরাষ্ট্র-ইন্দোনেশিয়া বাণিজ্য চুক্তি: ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে শুল্ক কমে ১৯ শতাংশ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার ওয়াশিংটন থেকে ঘোষণা করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইন্দোনেশিয়া একটি নতুন বাণিজ্যচুক্তিতে পৌঁছেছে। চুক্তি অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি-করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলেছিল, তা এখন ১৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। পরিবর্তে জাকার্তা ১৫ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন জ্বালানি, ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য এবং ৫০টি বোয়িং জেট কিনতে রাজি হয়েছে। শুল্ক কমানোর কার্যকারিতা তারিখ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, তবে চুক্তিটি ট্রাম্প প্রশাসনের চলমান শুল্ক কূটনীতির অন্যতম উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রেক্ষাপট

ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৭ সালের পর থেকে আমদানি শুল্ককে প্রধান আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউস ঘোষণা দেয় যে ১ আগস্ট থেকে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ৩২ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বসবে। সেই চাপের মধ্যেই দুই দেশ দ্রুত আলোচনায় বসে এবং মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে নতুন হার নির্ধারণে সম্মত হয়। এর আগে যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম ও সাময়িকভাবে চীনের সাথেও শুল্ক সংশ্লিষ্ট সমঝোতায় পৌঁছেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা

• ১৯%: ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে নতুন যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক হার

• ৩২%: প্রথমে ঘোষিত প্রস্তাবিত হার

• ১৫ বিলিয়ন ডলার: ইন্দোনেশিয়ার সম্ভাব্য মার্কিন জ্বালানি ক্রয়

• ৪.৫ বিলিয়ন ডলার: কৃষিপণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি

• ৫০টি: বোয়িং জেট অর্ডার

• ১ আগস্ট: পুরনো শুল্ক হার কার্যকরের ঘোষিত তারিখ, যা এখন পর্যালোচনাধীন

প্রতিক্রিয়া

জাকার্তায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নতুন সমঝোতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘নতুন উচ্চতায়’ নিয়ে যাবে। তবে ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন সতর্ক করেছে যে ১৯ শতাংশ হারও এখনও ‘মাঝারি-উচ্চ’ ও প্রতিযোগিতা কমিয়ে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন স্বাগত জানিয়ে বলেছে, বোঝা কিছুটা হালকা হলেও ‘চূড়ান্ত লক্ষ্যে’ পৌঁছাতে আরও শুল্ক ছাড় দরকার। কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা ট্রাম্পের ‘শিল্প-কেন্দ্রিক’ কৌশলের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বিশ্লেষণ

বিশ্লেষকদের মতে, ইন্দোনেশিয়ার ২৮০ বিলিয়ন ডলারের মোট রপ্তানির বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রমুখী নয়, তাই শুল্ক হুমকি দেশটিকে তুলনামূলক দ্রুত ছাড় দিতে রাজি করিয়েছে। অপরদিকে, বোয়িং-এর ৫০টি জেট বিক্রি ট্রাম্প প্রশাসনের ঘরোয়া শিল্প-কেন্দ্রিক এজেন্ডাকে শক্তি জোগাবে। তবে ১৯ শতাংশ হার দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ভোক্তাদের ব্যয় সামান্য বাড়িয়ে দিতে পারে, বিশেষত ইন্দোনেশিয়ান কাচামাল ও পোশাক খাতে।

এরপর কী

হোয়াইট হাউস বলছে, চুক্তির আইনি খসড়া ‘শিগগিরই’ প্রকাশ করা হবে এবং তারপর ৩০ দিনের জনমত গ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে। শুল্ক হ্রাস কার্যকর হতে পারে তৃতীয় প্রান্তিকে। ট্রাম্প প্রশাসন এখন ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও অনুরূপ দর-কষাকষি চালাচ্ছে, যা আগামী নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্টের বাণিজ্য সাফল্যের তালিকা দীর্ঘ করতে পারে। তবে কংগ্রেস ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সম্ভাব্য আপত্তি এখনো ঝুঁকি হিসেবে রয়ে গেছে।

More From Author

ভয়েস অব আমেরিকার জরিপে ভারত-পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশিদের ভাবনা: পছন্দ, অপছন্দ ও কূটনৈতিক বার্তা

সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই আসতে পারে আইফোন ১৭ সিরিজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *