এপস্টেইন ফাইল বিতর্কে পাম বন্ডির পাশে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

টোন ও রাজনৈতিক পক্ষপাত: হালকা ডানপন্থী
কেন: ট্রাম্পের বক্তব্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, সমালোচনামূলক দিকগুলো কম তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রশাসনের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়নি।


কি ঘটেছে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, বিতর্কিত আর্থিক ব্যবসায়ী জেফ্রি এপস্টেইন সম্পর্কিত নথিপত্র প্রকাশে স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে নিজের প্রশাসনের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। মঙ্গলবার পেনসিলভানিয়া সফরের আগে হোয়াইট হাউসের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প বলেন, বন্ডি “খুব ভালো কাজ করেছেন” এবং তিনি যা বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন, সেটাই প্রকাশ করা উচিত।


ট্রাম্প যা বলেছেন
ট্রাম্প বলেন, বন্ডি তাঁকে এপস্টেইন-সংশ্লিষ্ট ফাইল নিয়ে একটি “খুব দ্রুত ব্রিফিং” দিয়েছেন এবং সেখানে কোনো নির্দিষ্ট নাম বা তালিকার প্রসঙ্গ আসেনি।

  • “তিনি খুব ভালোভাবে বিষয়টি সামলেছেন,”—ট্রাম্প একাধিকবার এই মন্তব্য করেন।
  • তিনি জানান, বন্ডি যা বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন, সেটাই প্রকাশ করবেন—এই সিদ্ধান্ত তাঁর।

কেন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ
পাম বন্ডি, যিনি ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, তাকে এখন ট্রাম্পপন্থী MAGA গোষ্ঠীর ভেতর থেকেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, এপস্টেইনের একটি “ক্লায়েন্ট লিস্ট” তাঁর ডেস্কে রয়েছে—এই মন্তব্যই এখন উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। পরে অবশ্য বন্ডি বলেন, তিনি আসলে এপস্টেইন-সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের ফাইলের কথা বলেছিলেন।

ট্রাম্পের পক্ষ থেকে এই মন্তব্যের মাধ্যমে মূলত বন্ডির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে এবং একইসঙ্গে এপস্টেইন ঘিরে ছড়ানো ষড়যন্ত্রতত্ত্ব থেকে নিজেকে আলাদা রাখার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে।


DOJ ও FBI-এর মেমো বিতর্ক আরও বাড়িয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (DOJ) ও ফেডারেল তদন্ত সংস্থা (FBI) এই সপ্তাহে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়:

  • জেফ্রি এপস্টেইনের কোনো ক্লায়েন্ট লিস্ট ছিল না
  • তিনি ২০১৯ সালে নিউ ইয়র্ক সিটির জেলে আত্মহত্যা করেছেন

এই তথ্য MAGA আন্দোলনের বহু সমর্থকের কাছে অগ্রহণযোগ্য। তারা বহু বছর ধরে দাবি করে আসছেন যে এপস্টেইনের মৃত্যুর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে এবং ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের নাম গোপন রাখা হয়েছে।


বন্ডিকে ঘিরে বাড়ছে চাপ
ট্রাম্পের সমর্থন সত্ত্বেও বন্ডি তাঁর নিজের ঘরানার ভেতরেই চাপের মুখে পড়েছেন। অনেক MAGA-ঘনিষ্ঠ সমর্থকই তাঁকে স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি না রাখার অভিযোগে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলছেন।

  • সমালোচকরা বলছেন, তাঁর ফেব্রুয়ারির মন্তব্য ছিল বিভ্রান্তিকর।
  • বন্ডি এখন বলছেন, তিনি একটি নির্দিষ্ট তালিকা নয় বরং বিভিন্ন এপস্টেইন-সংশ্লিষ্ট ফাইল পর্যালোচনার কথা বলেছিলেন।

ফলে বন্ডির প্রতি MAGA ঘরানার অনেকের আস্থা নষ্ট হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।


ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে চাপ
ডেমোক্র্যাট নেতৃবৃন্দ ও সমর্থকরা প্রশাসনের কাছ থেকে এপস্টেইন সংক্রান্ত নথিপত্রের পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ দাবি করছেন। তাদের মতে, তথ্য লুকানোর প্রবণতা সাধারণ মানুষের আস্থাকে আরও দুর্বল করছে।

ট্রাম্প বা বন্ডি এই দাবির কোনো প্রত্যক্ষ জবাব না দিলেও, রাজনৈতিক চাপ বাড়ছেই।


প্রেক্ষাপট: এপস্টেইনের শক্তিশালী যোগাযোগমাধ্যম
নাবালিকা পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত জেফ্রি এপস্টেইন ছিলেন বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনীতিকের সঙ্গে সম্পর্কিত:

  • ট্রাম্প, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ব্রিটেনের প্রিন্স অ্যান্ড্রু এবং আরও বহু ধনী ও খ্যাতিমান ব্যক্তি তাঁর সামাজিক বৃত্তে ছিলেন।
  • এপস্টেইনের ঘনিষ্ঠ সহচর ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল ইতোমধ্যেই মানবপাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

এই সংযোগগুলোই এপস্টেইন বিষয়ক নথিপত্র নিয়ে জনমনে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি করেছে।


সমর্থকদের মনোভাব বদলানোর চেষ্টা
সপ্তাহান্তে ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ডির পক্ষে আবারও বক্তব্য দিয়েছেন এবং নিজের সমর্থকদের “এপস্টেইন ফাইল” প্রসঙ্গে এগিয়ে যেতে বলেছেন। তবুও এই বিতর্ক থামছে না।

ট্রাম্পের সমর্থন সত্ত্বেও এটি স্পষ্ট যে MAGA আন্দোলনের ভেতরেই বিভাজন তৈরি হচ্ছে—যেখানে অনেকেই প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।


মূল বিষয়গুলো সংক্ষেপে

  • ট্রাম্প বলছেন, বন্ডি বিশ্বাসযোগ্যতার ভিত্তিতে নথি প্রকাশ করবেন।
  • DOJ ও FBI জানায়, কোনো “ক্লায়েন্ট লিস্ট” নেই এবং এপস্টেইন আত্মহত্যা করেছেন।
  • বন্ডির ফেব্রুয়ারির মন্তব্য ঘিরে MAGA গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
  • ডেমোক্র্যাটরা নথি প্রকাশের দাবিতে সোচ্চার।
  • বিতর্ক এখনও থামছে না—নতুন রাজনৈতিক চাপ ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: www.thenewyorkeditorial.com

More From Author

Running macOS and Windows 10 on the Same Computer

মালায়ালাম ছবিতে শিল্পার দূরত্ব: ভাষা-ভয় নাকি মানদণ্ডের চাপ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *